সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লেখার সঠিক নিয়ম



সৃজনশীল প্রশ্নত্তোর


ক. জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তর:

জ্ঞান স্তর হলো দক্ষতার সর্বনিম্ন স্তর, জ্ঞানমূলক প্রশ্নটি উদ্দীপকের ওপর সরাসরি নির্ভরশীল না হলেও উদ্দীপকটি পাঠ্যবইয়ের যে গল্পটির ওপর ভিত্তি করে রচিত হয় জ্ঞানমূলক প্রশ্নটি পাঠ্যবইয়ের সেই গল্প হতে নেয়া হয়ে থাকে। জ্ঞানমূলক প্রশ্নের জন্য কী, কে, কখন, কোথায়, কাকে বলে  এই জাতীয় প্রশ্ন গুলো ভালো করে মুখস্থ করতে হবে। জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তরটি পাঠ্যবই হতে এক কথায় অথবা একটি পূর্ণ বাক্যে দেওয়া উত্তম; কোনো বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণের দরকার নেই।

খ. অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর:

অনুধাবন স্তর হলো কোন বিষয়ের অর্থ বোঝে ব্যাখ্যা করার দক্ষতা।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন দুটি অংশে বিভক্ত : জ্ঞানমূলকে-১ নম্বর এবং চিন্তন বিশ্লেষণে-১ নম্বর।
প্রথমেই প্রসঙ্গটি এক বাক্যে সঙ্গায়িত করে নিতে হবে। উত্তরের এই অংশটি হলো জ্ঞান অংশ। তারপর প্রসঙ্গটি ৪-৫ লাইনে  নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা করতে হবে বা বুঝিয়ে লিখতে হবে । উত্তরের এই অংশটি হলো অনুধাবন অংশ। পরীক্ষার্থীকে প্রত্যেক অংশের জন্য আলাদা-আলাদা নম্বার দেয়া হবে। পরীক্ষার্থী যদি শুধু জ্ঞান অংশটি লিখে, তবে শুধু ১ নম্বর পাবে। আর যদি জ্ঞানের সাথে অনুধাবন অংশটি লিখতে পারে তবে পেয়ে যাবে ১+১= ২ নম্বর। অনুধাবনমূলক প্রশ্নে সাধারণত কী বোঝায়, ব্যাখ্যা করো, বর্ণনা করো, কেন এ ঘটনা ঘটেছে ইত্যাদি জানতে চাওয়া হয়ে  থাকে।

গ. প্রয়োগমূলক প্রশ্নের উত্তর:

প্রয়োগ স্তর হলো পূর্বের অর্জিত জ্ঞান ও অনুধাবন কে নতুন পরিস্থিতিতে কিংবা অপরিচিত পরিস্থিতিতে ব্যবহার করার দক্ষতা।
গ অংশের উত্তর লেখার জন্য শিক্ষার্থীদের উদ্দীপকের সাহায্য নিয়ে খুঁজে বের করতে হয়, তাতে পাঠ্যবইয়ের কোন ঘটনা ধারণা, নিয়ম, বিধি, সূত্র বা তত্ত্বের প্রতিফলন ঘটেছে।
প্রয়োগমূলক প্রশ্ন তিনটি অংশে বিভক্ত : জ্ঞানমূলকে-১ নম্বর, চিন্তন বিশ্লেষণে-১ নম্বর এবং প্রয়োগমূলকে-১ নম্বর ।
প্রথমেই প্রসঙ্গটি এক বাক্যে সঙ্গায়িত করে নিতে হবে। উত্তরের এই অংশটি হলো জ্ঞান অংশ। উক্ত প্রসঙ্গটি ৪-৫ লাইনে  নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা করতে হবে বা বুঝিয়ে লিখতে হবে । উত্তরের এই অংশটি হলো অনুধাবন অংশ।
প্রয়োগের তৃতীয় অংশে অবশ্যই পরীক্ষার্থীকে  উদ্দীপক এবং মূলপাঠ্য বইয়ের আলোকে  সম্পর্ক নিরূপণের ক্ষেত্রে প্রকৃত সমস্যার সমাধান করতে হবে। প্রয়োগ অংশটি ৭-৮ বাক্য লেখা উত্তম। পরীক্ষার্থী যদি শুধু জ্ঞান অংশটি লিখে, তবে শুধু ১ নম্বর পাবে। যদি জ্ঞানের সাথে অনুধাবন অংশটি লিখতে পারে তবে পেয়ে যাবে ১+১= ২ নম্বর। আর যদি প্রয়োগ অংশ সহ পুরো উত্তরটি সঠিকভাবে লিখতে পারে তবে পেয়ে যাবে পুরো ১+১+১= ৩ নম্বর। প্রয়োগ প্রশ্নে উদ্দীপকের প্রদত্ত ক্ষেত্রে কোনো একটি প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করতে বলে বা বর্ণনা করতে বলে কিংবা কোনো সূত্র, নিয়ম, তত্ত্ব, নীতি, পদ্ধতি ইত্যাদি প্রয়োগ করে কিছু নির্ণয় করতে বলে।


ঘ. উচ্চতর দক্ষতামূলক প্রশ্নের উত্তর:

উচ্চতর  স্তরের দক্ষতা হলো কোন বিষয়বস্তুর বিশ্লেষণ (সাধারণ থেকে বিশেষ), সংশ্লেষণ (বিশেষ থেকে সাধারণ) এবং মূল্যায়ন (বিচার-বিবেচনা, যুক্তি) করার দক্ষতা।
প্রশ্নের ঘ অংশের উত্তর লেখার জন্য শিক্ষার্থীকে উদ্দীপকটির মধ্য দিয়ে পাঠ্যবইয়ের মূল বিষয়বস্তুতে যেতে হবে এবং পাঠ্যবইয়ের তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করে নিজস্ব ভাবনা-চিন্তা বা বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।  উদ্দীপকে বর্ণিত কাহিনি এবং পাঠ্যবইয়ের গল্পের কাহিনির মধ্যে কতটুকু  মিল ও অমিল আছে শিক্ষার্থীকে তা ব্যাখ্যা করতে হবে।
উচ্চতর প্রশ্ন চারটি অংশে বিভক্ত : জ্ঞানমূলকে-১ নম্বর, চিন্তন বিশ্লেষণে-১ নম্বর এবং প্রয়োগমূলকে-১ নম্বর ।
প্রথমেই প্রসঙ্গটি এক বাক্যে সঙ্গায়িত করে নিতে হবে। উত্তরের এই অংশটি হলো জ্ঞান অংশ। উক্ত প্রসঙ্গটি ৪-৫ লাইনে  নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা করতে হবে বা বুঝিয়ে লিখতে হবে । উত্তরের এই অংশটি হলো অনুধাবন অংশ।
প্রয়োগের তৃতীয় অংশে অবশ্যই পরীক্ষার্থীকে  উদ্দীপক এবং মূলপাঠ্য বইয়ের আলোকে  সম্পর্ক নিরূপণের ক্ষেত্রে প্রকৃত সমস্যার সমাধান করতে হবে। উত্তরের এই অংশটি হলো প্রয়োগ। প্রয়োগ অংশটি ৭-৮ বাক্য লেখা উত্তম। পরীক্ষার্থী যদি শুধু জ্ঞান অংশটি লিখে, তবে শুধু ১ নম্বর পাবে। পরীক্ষার্থীকে প্রত্যেক অংশের জন্য আলাদা-আলাদা নাম্বার দেয়া হবে। যদি উদ্দীপকের প্রদত্ত ক্ষেত্রে প্রসঙ্গটি প্রয়োগ করার পর এর থেকে নতুন করে কোনো একটি সিদ্ধান্তে আসতে পারে, কিংবা কোনো একটি উক্তি সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে পারে কিংবা কোনো একটি ঘটনার পিছনের কারণগুলো কী ব্যাখ্যা করতে পারে (প্রশ্নে যেটি চাওয়া হয়েছে সেই অনুসারে), সে ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থী পেয়ে যাবে আরও ১ নম্বর। উত্তরের এই অংশটি হলো উচ্চতর দক্ষতা অংশ।  যদি পরীক্ষার্থী চারটি অংশ সঠিকভাবে লিখতে পারে তবে পেয়ে যাবে পুরো ১+১+১+১= ৪ নম্বর।

পরিশেষে, খ, গ ও ঘ  প্রশ্নের উত্তরে প্রতিটি প্যারা বা স্তর লেখার জন্য এক নম্বর দেয়া হবে। কাজেই কেউ যদি দেখে যে এ তিনটি স্তরের কোনো একটিতে কম পেয়েছে, তাহলে বুঝতে হবে, সে একটা প্যারা বা স্তর কম লিখেছে। অথবা যেকোনো একটা প্যারা বা স্তরের উত্তর সন্তোষজনক ছিল না।
নিয়ম-কানুন নিয়ে সচেতন থাকতে গিয়ে আবার সময়ের ব্যাপারে উদাসীন হয়ে যাওয়াটা ঘোর বোকামি। প্রশ্নভেদে নিজের মতো করে প্রতি প্রশ্নের জন্য সময় ভাগ করে নিতে হবে, যেটা পুরোপুরিই উত্তরদাতার উপর নির্ভর করে। কৌশল করে, নিয়ম মেনে একটা সৃজনশীলের উত্তর দিলে দশে অন্তত নয় পাওয়া সম্ভব।

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

PSC Bangladesh and Global Studies